কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামের মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচতে হয়। অসময়ের বন্যা বৃষ্টিতে বছরের বড় একটি সময় জনপদগুলো হয়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন। বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের তেমনি একটি এলাকা চর কৃষ্ণপুর।
শিক্ষা-চিকিৎসা-ব্যবসাসহ যেকোন প্রয়োজনেই উপজেলা শহর নাগেশ্বরীই কেবল নয় পাশের কুমুদপুর বাজারে যাতায়াতে শুকনো মৌসুমে এই চর কৃষ্ণপুরবাসীর পায়ে হাটার বিকল্প নেই। আবার অসময়ের বন্যা বৃষ্টিতে পায়ে হাঁটার সেই রাস্তাটুকু তলিয়ে থাকে বছরের বড় একটি সময়। এভাবেই উঁচু একটি সড়কের অভাবে জীবন-জীবিকার গতি থমকে আছে এই এলাকায়।
বহু বছর অপেক্ষার পরও যখন এখানে একটি সড়ক নির্মাণের দাবি পূরণ হয়নি তখন স্থানীয়রাই উদে্যাগ নেন সড়কটি তৈরির। চর কৃষ্ণপুর গ্রামের অধিবাসীরা এরকম দীর্ঘ একটি রাস্তা তৈরি করতে তাদের বহু টাকা লাগবে জেনেও তারপরও তারা নেমে পড়েছেন। নিজেদের যতটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে। এই গ্রামে যাতায়াতে কোন প্রকার রাস্তা নেই। এ চরের ছেলে-মেয়রা যোগাযোগের অভাবে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছে। বহু বছর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং উপর মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করেও একটি সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা হয়নি। তাই আমরা গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে নিজেদের সড়ক নিজেরাই তৈরি করছি।
কমিটির কোষাধ্যক্ষ আব্দুল খালেক জানান, গ্রামেরে বাসিন্দারা নিম্নে দুই হাজার হতে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। তবে এই টাকা খুব নগণ্য। সড়কটি নির্মাণে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা খরচ হবে।
বল্লভেরখাষ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান এস.এম আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি তৈরিতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে বরাদ্দ দেয়া সম্ভব নয়। তাই চরের বাসিন্দাদের জোটবদ্ধ হয়ে কাজটি শুরু করার পরামর্শ দিয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, চর কৃষ্ণপুরবাসী সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে একটি সড়ক নির্মাণ করছেন। এটি প্রশংসনীয় কাজ। আমরা তাদের কাজে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
টিএইচ